ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়াতে একটি ভেঙে যাওয়া সংসার আবার জোড়া লাগল। রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) চেষ্টায় দ্বিতীয়বার বিয়ের মধ্যে দিয়ে রোববার রাতেই নতুনভাবে সংসার শুরু করলেন হামিদ-সুমি দম্পতি।
শুধু তাই নয়, সংসার ভেঙে যাওয়া ওই দম্পতির দেনমোহর বাড়িয়ে ওই দিন রাতেই কাবিন রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করা হয়।
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুর রহমান ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের এ ধরনের উদ্যোগকে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনা প্রচার হওয়ায় রুহিয়া থানা এলাকার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, আনুমানিক ১৫ বছর আগে উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের ঝাড়গাঁও গ্রামের সুরেশ আলীর দ্বিতীয় ছেলে মো: হামিদ আলীর সাথে রুহিয়া ইউনিয়নের ঘনিমহেষপুর গ্রামের মো: হামিদ ইসলামের মেয়ে সুমি আক্তারের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।
তাদের সংসারে একে একে আসে দুই সন্তান। মেয়েটির বয়স বারো বছর আর ছেলের বয়স সাত বছর। এতদিন সংসারে মোটামুটি সুখ থাকলেও আনুমানিক তিন মাস আগে পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে মো: হামিদ সুমি আক্তারকে তালাক দেন।
সুমি আক্তারের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান পুরো ঘটনাটি জানতে পারেন এবং সুমি আক্তারের দু’টি সন্তানের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে ঘটনার তদন্তের ভার দেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: সুলতান রহমানকে।
এসআই সুলতান উভয় পরিবারের সাথে পৃথক পৃথকভাবে কথা বলে ভুল সংশোধনের পরামর্শ দেন এবং তাদেরকে থানা হাজির করেন। এ সময় ঠাকুরগাঁও আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলামসহ দুই ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত হন।
পরে ওসি শহিদুর রহমান নিজ উদ্যোগে এসআই সুলতান রহমানের সহায়তায় দুই পরিবারের লোকজন ও বিচ্ছেদকৃত স্বামী-স্ত্রীকে আন্তরিকভাবে বুঝানোর পর সংসারটি পুনরায় সচল করতে সম্মতি প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে পুনরায় ওই দম্পতিকে নতুন করে রেজিস্ট্রি কাবিনের মাধ্যমে বিয়ে দেয়া হয়।
সুমি আক্তার জানান, ‘ওসি স্যারের হস্তক্ষেপের কারণেই আজ আমি আবার ফিরে পেলাম আমার সংসার স্বামীকে। বাচ্চা ফিরে পেল বাবাকে। আমি ওসি স্যারসহ সকলের কাছে ঋণী।’
অ্যাডভোকেট রিয়াজুর ইসলাম বলেন, ‘থানার অফিসার ইনচার্জের আন্তরিক সহযোগিতা ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে দুইটি কোমলমতি সন্তানের ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ রেখে আপস মিমাংসা করে তাদের পুনরায় বিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবন মধুর হোক এই কামনা করি।’
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো: সুলতান বলেন, ‘সংসারটি একত্র করতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে।’
ওসি শহিদুর রহমান বলেন, ‘আমিও একজন বাবা। সুমির দুটি সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এমন উদ্যোগ নিয়ে ভেঙে যাওয়া সংসারটি জোড়া লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি