নেত্রকোনার ‘মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজে’ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে চলতি বছর কোনো শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ২০২২ সালে কলেজটিতে বিজ্ঞান বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। ফলে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো শিক্ষার্থী ছিল না। যদিও কলেজটিতে বিজ্ঞান বিভাগে পাঠদানে চারজন শিক্ষক ও একজন প্রদর্শকসহ পাঁচজন রয়েছেেন। ওই পাঁচ শিক্ষকের বেতন বাবদ বছরে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৪১ লাখের বেশি টাকা। এছাড়া কলেজটিতে কলেজটিতে বাণিজ্য বিভাগ থেকে এবার ৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। এরমধ্যে দুইজন নিয়মিত, আর বাকি দুইজন আগের বছরের ফেল করা শিক্ষার্থী। বাণিজ্য বিভাগে রয়েছেন তিনজন শিক্ষক। কলেজটিতে একজন অধ্যক্ষ ও ২১ জন শিক্ষক রয়েছেন। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী পৌর শহরে থাকা কলেজে প্রতি বিভাগে ন্যূনতম ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকা আবশ্যক।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ পৌরশহরের দক্ষিণ দৌলতপুর এলাকায় এক একর ৭৩ শতাংশ জায়গায় ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজ’। কলেজটিতে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্যসহ তিনটি বিভাগ রয়েছে। ২০০১ সালে পাঠদানের অনুমতি পায়। এমপিওভুক্ত হয় ২০০৪ সালে। কলেজটিতে দুটি বহুতল ভবন বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন রয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে বহুতল বিশিষ্ট ছাত্রী হোস্টেল। কলেজটিতে ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। ফলে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কোনো শিক্ষার্থী অংশ নেয়নি। ২০২৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে ৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। কলেজ সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে কলেজে মানবিক শাখায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রায় ৪৫০-৫০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বাণিজ্য বিভাগে রয়েছে পাঁচজন শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগে রয়েছে পাঁচজন শিক্ষার্থী, আর বাণিজ্যে রয়েছে ৪ জন।
মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজের এবার এইচএসসির ফলাফল ঘেঁটে দেখা গেছে, কলেজটি থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বাণিজ্য বিভাগ থেকে চারজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিন জন কৃতকার্য হয়েছে। আর মানবিক বিভাগ থেকে এবার ২২৩ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ১১২ জন। বাকিরা ফেল। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুখলেছুর রহমান আকন্দ বলেন, আমাদের হাওরাঞ্চলে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে পড়তে তেমন আগ্রহী হয় না। এরমধ্যে যারা এসব বিভাগে পড়তে চায় তারা বড় শহরে চলে যায়। বড় শহরে যেহেতু বিজ্ঞান-বাণিজ্যে পাইভেট, কোচিংসহ নানা সুবিধা থাকে, তাই তারা সেখানেই যেতে চায়। তবু আমরা শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত দুই বছর শিক্ষার্থী না থাকলেও সম্প্রতি বিজ্ঞানে চারজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আরও কিভাবে বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টি অবহিত করলে কলেজের সদ্য মনোনিত সভাপতি গোলাম রব্বানি পুতুল জানান, আমি মাত্র কলেজের সভাপতি মনোনীত হয়েছি। এখনও কলেজে কোনো সভা ও মিটিং কিছুই করিনি। বিষয়টি জেনেছি ভালো হয়েছে। বিজ্ঞান-বাণিজ্যে শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য সব রকম উদ্যোগ নেব। মানসম্মত শিক্ষা, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া যত সমস্যা আছে সবগুলো চিহ্নত করে তা দ্রুত সমাধান করা হবে।