শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী চান্দাপাড়া গ্রামের এরশাদ (৩৫) নামে এক শ্রমিক ভারতীয় কারাগারে রয়েছে। এক মাসেও ফেরৎ দেয়নি ভারতীয় পুলিশ। ফলে এরশাদের পরিবারের সদস্যরা মানবতার জীবনযাপন করছে। এরশাদ (৩৫) উপজেলার সীমান্তের সিঙ্গাবরুনা ইউনিয়নের চান্দাপাড়া গ্রামের মৃত আঃ ছাত্তারের ছেলে।
জানা গেছে, এরশাদ তার প্রতিবেশী বকুল তলা গ্রামের গরু ব্যবসায়ী আজিজুর রহমানের গরুর খামাড়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। ১ ছেলে ১ মেয়েসহ ৪ সদস্যের পরিবার তার । এরশাদের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান গত এক মাস পূর্বে এরশাদ ভারত সীমান্তে গরু চরানো অবস্থায় ২টি গরু ভারতে চলে যায়। বহু খুঁজাখুঁজির পরেও গরু না পাওয়ায় গরুর মালিক আজিজুর রহমান এরশাদকে তার গরু এনে দেয়ার জন্য চাপ দেন।
এমতাবস্থায় খবর হয় গরু দুইটি সীমান্তের ওপারে ভারতের আদিবাসীদের বাড়িতে আটক আছে। পরে গরুর মালিক আজিজুর রহমানের চাপে রাতের আধারে গরু উদ্ধার করতে শ্রমিক এরশাদ অবৈধভাবে সীমান্তপথে ভারতে প্রবেশ করে।
এসময় ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে আটক করে। এরশাদের পরিবার ও সীমান্তের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, শ্রমিক এরশাদের দাবির পরিপেক্ষিতে ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ এরশাদকে দুইদিন থানায় আটকে রেখে প্রমানাদির জন্য অপেক্ষা করে।
কিন্ত এলাকা থেকে কেউ যোগাযোগ না করায় অপেক্ষার পর মহেন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ এরশাদকে তোরা কারাগারে পাঠায়। এক মাসেও এরশাদকে ফেরৎ দেয়নি ভারতীয় পুলিশ। বর্তমানে এরশাদ ভারতের তোরা কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে এরশাদের পরিবারের সদস্যরা অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন। সরেজমিনে অনুসন্ধানে চান্দাপাড়া গ্রামে এরশাদের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী আখি আক্তার ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা হলে এসব তথ্য জানা গেছে।
আখি আক্তার বলেন, তার স্বামী এরশাদ গরুর মালিক আজিজুর রহমানের দৈনিক মজুরিতে কাজ করতো। এরশাদ ভারতের কারাগারে আটকের পর থেকে তাদের বাড়িতে ঠিকমতো চুলা জ্বলে না। খোজখবর নেয়নি গরুর মালিক আজিজুর রহমানসহ অন্যকেউ।
ফলে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে তার পরিবারের সদস্যরা। তবে গরুর মালিক আজিজুর রহমান বলেন তিনি বিভিন্নভাবে ভারত থেকে এরশাদকে ছাড়িয়ে আনার জন্য গোপনে চেষ্টার পাশাপাশি তার পরিবারের সদসের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
নকশী সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার তোফাজ্জল হোসেন বলেন অবৈধ অনু প্রবেশের দায়ে কোনো লোক ভারতে আটক হলে কমপক্ষে ৩ মাস কারাগারে থাকতে হয়। তিনি নতুন এসেছেন বলে জানিয়ে বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান। তিনি বলেন তাদের মধ্যে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল। এ কারণে তারা হয়তো বিষয়টি বিজিবিকে অবহিত করেনি।
তার মতে ভারতীয় গবাদি পশু ও মানুষ বাংলাদেশ আসলে অথবা বাংলাদেশি গবাদি পশু ও মানুষ ভারতে প্রবেশ করলে উভয় দেশের বিজিবি ও বিএসএফের সমন্বয়ে ফেরৎ আনা নেয়া করা হয়। সে হিসেবে ওই পরিবারের লোকজন হয়তো বিজিবির সাথে যোগাযোগ করেনি।