নেত্রকোনায় বোরো আবাদের জন্য সেচকাজে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পড়েছে। কৃষকরা রাত জেগে পাহারা বসালেও চুরি ঠেকাতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। এতে বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় ১০৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের আওতায় প্রায় ৬ লাখ ৩৩ হাজার গ্রাহকের জন্য ২৯ হাজার ৫১১টি ট্রান্সফরমার রয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সেচকাজে ১৬ হাজার ট্রান্সফরমার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর পর এসব ট্রান্সফার চুর হয়ে যাচ্ছে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। গত ১০ ডিসেম্বর পূর্বধলার বাড্ডা গ্রামের কৃষক মো. মুখলেছুর রহমান খান, নাজিম উদ্দিন খান, এনায়েত খান ও জাকির আহম্মেদ খানের চারটি ট্রান্সফরমান চুরি হয়ে যায়। ঐ গ্রামের কৃষক মুখলেছুর রহমান খান জানান, গত ১০ ডিসেম্বর গভীর রাতে তাদের চারটি ট্রান্সফরমান চুরি হয়ে যায়। পরদিন ভোরে গিয়ে দেখা গেছে খুঁটি থেকে ট্রান্সফরমারের খোলস নিচে পড়ে আছে। ভেতরের তারসহ যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছে।
বাড্ডা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান খান বলেন, কয়েক দিন পর পরই ট্রান্সফরমান চুরি হয়। নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, এভাবে কৃষকদের ট্রান্সফরমার চুরি হলে বোরো জমিতে সেচের সমস্যা হবে। যথাসময়ে বোরো চাষ করতে পারবেন না কৃষকরা। চুরি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও কৃষি বিভাগের তৎপরতা বৃদ্ধির জন্য তিনি আহ্বান জানান।নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাসুম আহমেদ বলেন, ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তাদের হিসাব অনুযায়ী গত এক বছরে জেলায় ১০৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। নেত্রকোনা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।