প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ৬:৩০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ৫:০১ অপরাহ্ণ
নেত্রকোনা শহরে ‘বাদাম বেইচ্চা যা পাই, তা দিয়া ঠিকমতো সংসার চলে না’ আমার
মোঃ রাকিব মিয়ার কাছে বয়স জানতে চাইলে জবাবে বললেন ২৬ বছর। বয়সের সাথে সাথে শারীরিক সুস্থতা এখন তাঁর নিত্যসঙ্গী। নেত্রকোনা শহীদ মিনারের সামনে প্রতিদিনই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বাদাম বিক্রি করছেন তিনি। টানা ৫ বছর ধরে বাদাম বিক্রির টাকায় সংসার চালাচ্ছেন। তিনি কারও দয়া নিতে চান না। তাই এখনো কর্মচঞ্চল দিন কাটে তাঁর। বাদাম বিক্রেতা মোঃ রাকিব মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে। মোঃ রাকিব মিয়ার পিতা মোঃ রনি মিয়া একজন কৃষক। রাকিব মিয়ার পরিবারে তারা পাঁচ ভাই ও এক বোন এবং মা বাবাকে নিয়ে তাঁর সংসার। ২০১৯ সাল থেকে শহীদ মিনার এলাকায় ফুটপাতে ভ্যানগাড়িতে করে বাদাম ভেজে বিক্রি করছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর ) বিকেলের দিকে শহীদ মিনারের সামনে ওই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ির পাশে কথা হয় মোঃ রাকিব মিয়ার সঙ্গে। আলাপচারিতায় উঠে আসে তাঁর পরিবারের কষ্টের কথা, বাঁচার সংগ্রাম, হতাশা ও সমস্যার কথা। তিনি জানালেন, তাঁর নিজের কোনো জমিজমা নেই। ফলে সংসারের বেশিরভাগ খরচ তাঁকেই বহন করতে হয়।
কথাবার্তার একপর্যায়ে মোঃ রাকিব মিয়ার মনোযোগ সরে গেল এক ক্রেতার দিকে। তাঁর কাছে বাদাম চাইলেন ওই ক্রেতা। এ সময় একটি চুলায় আগুনে তেতে ওঠা কালচে বালুতে কাঁচা বাদাম ছেড়ে দিলেন তিনি। এরপর পরম যত্ন আর কৌশলে সেগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ভেজে নিলেন। সবশেষে গরম-গরম বাদামগুলো একটি ছোট ঠোঙায় ভরে তুলে দিলেন ক্রেতার হাতে। বিনিময়ে ১০ টাকা পেলেন মোঃ রাকিব মিয়া। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সময়ে সেখানে বাদাম বিক্রি করেন মোঃ রাকিব মিয়া। মোঃ রাকিব মিয়া বলেন, প্রতিটি ছোট প্যাকেটে ১০ টাকা ও বড় প্যাকেটে ২০ টাকায় খুচরা বাদাম বিক্রি করেন তিনি। বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিদরে বাদাম কিনে সেগুলো ভেজে বিক্রি করেন গড়ে ২৫০ টাকায়। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সময়ে গড়ে ৪ থেকে ৫ কেজি বাদাম বিক্রি করেন তিনি। প্রতি কেজি বাদাম বিক্রি করে লাভ হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকা। সেই হিসেবে প্রতিদিনই গড়ে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা তাঁর লাভ হয়। আবহাওয়া খারাপ থাকলে, বৃষ্টিবাদল হলে কিংবা শরীর খারাপ হলে ওই দিন আর বাদাম বিক্রি করেন না।
বাজারে নিত্যপণ্যের দাম চড়া থাকায় এ টাকায় সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয় তাদের। প্রায়ই ধারকর্জ করতে হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বাদাম বেইচ্চা যা পাই, তা দিয়া ঠিকমতো সংসার চলে না। মোঃ রাকিব মিয়ার পরিশ্রমী ও লড়াকু উল্লেখ করে তৌহিদুল আলম ও মো. কামাল হোসেন বলেন, ওই বাদাম বিক্রেতা পরিশ্রমী ও লড়াকু মানুষ। বাদাম বিক্রেতা মোঃ রাকিব মিয়া বলেন ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচনী হামলায় তার বাড়ি ঘর ভেঙ্গে ফেলে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী সাফাতুলের কর্মী বাহিনী( নৌকা) বিজয়ী সমর্থন কর্মীরা।আর ঐ সময় সে সমর্থন করতো সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী।সাফায়েত উল্লাহর(মোটরসাইকেল)। তখন থেকেই সে নেত্রকোনা শহরে বসবাস শুরু করেন। মোঃ রাকিব মিয়া বর্তমান সময়ে যুব সমাজের দৃষ্টান্ত।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ শরীফ। নির্বাহী সম্পাদক : তাসেরা তাজরীন। বার্তা সম্পাদক : মোহাম্মদ আমান উল্যা।সম্পাদক ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: এমএস প্লাজা (৩য় তলা)২৭/সি/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
তুহিন
প্রেস ২১৯/২, ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল হতে মুদ্রিত। ফোন:
+৮৮-০২-৪১০৫২৪৯৪, মোবাইল: ০১৯৭১-৮৪২৩৬৫, ০১৭১১৮৪২৩৬৫, বার্তা: ০১৭৩১-৮৫৭১৮৬
,anantabanglanews24@gmail.com
Copyright © 2024 দৈনিক অনন্ত বাংলা. All rights reserved.