নেত্রকোনা শহরের প্রাণকেন্দ্র ছোট বাজার এবং মাছুয়া বাজারসংলগ্ন সুপার মার্কেট এলাকার ব্যস্ত সড়কে বসানো হয়েছে কাঁচামালের পাইকারি বাজার। এতে শহর জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আড়তদারি বাজার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে যানবাহন চলাচলে যেমন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
নেত্রকোনা শহরের মাছুয়া বাজারসংলগ্ন গৌরিপুরের কাচারির মাঠে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন ঢাকা বিভাগীয় উন্নয়ন বোর্ড থেকে সুপার মার্কেট নির্মাণ করে পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরে পৌরসভা দোকান ভাড়ার দিলেও সুপার মার্কেট আর সুপার মার্কেট থাকেনি। এখানে কাঁচামালের আড়তদারির ব্যবসা শুরু হয়। গত ৩৬ বছর ধরেই সুপার মার্কেট দখল করে কাঁচামালের আড়তদারির ব্যবসা চলছে। ফলে এখানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাইকারি ক্রেতারা সকাল ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানবাহন নিয়ে সড়ক দখল করে ব্যবসা করে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনে আসা কাঁচামাল সড়ক দখল করে উঠানো এবং নামানো হয়। ফলে এ কারণেও সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং সরকারি অফিসে যাতায়াতের সময় এখানে এক ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের ব্যবসার জন্য সহজ কোনো এলাকা দিলে আমরা এখান থেকে উঠে যাব। তবে সারা জেলার খুচরা বা পাইকারি ক্রেতা যাতে মালামাল পরিবহন করতে পারে সে রকম এলাকা দিতে হবে বলেও তারা জানান। এদিকে নেত্রকোনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় নেত্রকোনার সুধিজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সুপার মার্কেট থেকে কাঁচাবাজার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য আলোচনা করলেও কোনো কাজ অদ্যাবধি হয়নি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, যানজটের অন্যতম কারণ যে এই সুপার মার্কেটের আড়তদারি ব্যবসা, তা নিয়ে তেমন জোরালো কোনো কথা কেউ বলছেন না। এই কাঁচাবাজার এখান থেকে না সরানো পর্যন্ত জেলা শহরের যানজট কমানো কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে নেত্রকোনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেন শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার লোকজন মাছুয়া বাজারসংলগ্ন এলাকা থেকে কাঁচাবাজারটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন। এই ব্যাপারে পৌরসভার প্রশাসক মামুন খন্দকার বলেন, সুপার মার্কেট ভাড়ার নিয়ে কয়েক জন দোকানদার কাঁচামালের আড়তদারির ব্যবসা শুরু করে। ফলে পুরো মার্কেটই কাঁচামালের আড়ত হয়ে যায়। এখন এই পরিত্যক্ত মার্কেটটি পুনর্নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে।