নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চুরাটিয়া গ্রামের নিজ ঘর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- রুপালী আক্তার (২৭) ও তার মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম মুন (৭)। নিহত রূপা ও মুন উপজেলার চুরাটিয়া গ্রামের মোস্তাকিনের স্ত্রী ও মেয়ে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশ সুপার (এসপি) মির্জা সায়েম মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত রুপালীর বাবার দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা। মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রুপালীর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, তারা বিদ্যুৎস্পর্শে মারা গেছেন। রুপালীর বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, ১০/১২ বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দেই। মেয়ের জামাই মোস্তাকিন ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ বিভাগীয় কন্ট্রোল রুমে কর্মরত। মেয়ের ঘরে দুই নাতনি রয়েছে। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। সম্প্রতি মেয়ের জামাই মোস্তাকিন গ্রামের বাড়িতে তিন কাঠা জমি কিনেন। এই জমি থেকে মৌখিকভাবে মোস্তাকিনের ছোট ভাই হুমায়ুনকে ৪ শতক জমি দেওয়ার পর তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে গত ১৫ দিন আগে ওই কলহের জেরে জামাই মেয়েকে পিটিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এর দু-দিন পর আমি মেয়েকে তার স্বামীর বাড়িতে রেখে আসি। এখন মেয়ে ও নাতিকে মৃত পেলাম।
রুপালীর শাশুড়ি আমেনা খাতুন বলেন, আমার ছেলের বউ প্রতিদিনের মতো তার সাত বছরের মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম মুন ও দুই বছরের মেয়ে তাহমিনা আক্তার মুনিয়াকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৭টা বাজলেও রুপালী ও নাতনিরা ঘুম থেকে উঠছে না কেন এই ভেবে ডাকতে গিয়ে দেখি খাটের ওপর বিছানায় রুপালী ও রুবাইয়া তাবাসসুম মুন মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ছোট মেয়ে তাহমিনা আক্তার মুনিয়া তার মৃত মায়ের পাশে বসে আছে। রুপালীর স্বামী মোস্তাকিন তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার স্ত্রী-সন্তান বিদ্যুৎস্পর্শে মারা গেছে।
পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, নিহতদের সুরতহাল রিপোর্র তৈরি করা হয়েছে। গৃহবধূ রুপালীর ডান হাতে আগুনের জ্বলসানো চিহ্ন, দুই পায়ের গোড়ালির ওপরে ও দুই হাতের কব্জির ওপরে কালো দাগ রয়েছে। তার মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম মুনের ডান পায়ের গোড়ালি ও দুই হাতের কব্জির ওপরে গোল কালো দাগ দেখা গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।