প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ২:৩০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ৬:৫৫ অপরাহ্ণ
নেত্রকোনায় মজুত পর্যাপ্ত, তবুও এখনো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ
নেত্রকোনায় এখনো পর্যাপ্ত মজুত থাকা স্বত্ত্বেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ। মৌসুমের শেষের দিকে হওয়ায় কয়েক জাতের বীজ সংকট রয়েছে, তাই দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজার পর্যবেক্ষণের অভাবেই আসাদু ব্যবসায়ীরা এ সংকট তৈরি করছেন। দোকানে পর্যাপ্ত বীজ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ।নেত্রকোনা জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলা ও জেলা শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির পর্যাপ্ত ধান বীজ রয়েছে। সদরের বাজারে তুলনামূলক কিছুটা দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও উপজেলাগুলোতে ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নেত্রকোনা সদরের দুগিয়া এলাকার কৃষক মাসুদ রানা বলেন, আমার ১০ কাটা ধানের জমি রয়েছে। বাজারে ধান বীজ কিনতে এসেছি। ব্রি ধান ৮১ জাতের বীজ খুঁজছিলাম, এখন সেটি বাজারে নেই।
কৃষক অনিল কুমার জানান, ব্রি ধান ১০০ দুই কেজির প্যাকেট ২৬০ টাকা দরে পাঁচ প্যাকেট ধান বীজ ক্রয় করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবারে প্যাকেট প্রতি ৫০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে।সদরের কৈলাটি এলাকার কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, বাজারে ধান বীজের সংকট দেখিয়ে দাম বেশি রাখছেন দোকানদাররা। গত বছরের চেয়ে বাজারে হাইব্রিড বীজের দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকার চেয়ে বেশি। আমতলা এলাকা থেকে শহরে ধান বীজ ক্রয় করতে আসা মো. ইসমাইল জানান, প্রতি কেজি হাইব্রিড হীরা-২ জাতের ধান বীজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫২০ টাকা। গত বছর একই জাতের ধান বীজ তিনি ৩২০ টাকা করে ক্রয় করেছিলেন। এ নিয়ে শহীদ মিনারের পাশে বীজ ব্যবসায়ী মলয় সরকার জানান, মৌসুমের শেষের দিক হওয়ায় উচ্চ ফলনশীল দু-একটি জাত শেষ পর্যায়ে। কোম্পানিদের কাছে না থাকায় দাম একটু বেড়েছে।
এবিষয়ে জানতে সার হাইব্রিড বীজ ও কীটনাশক বিক্রেতা মামুন বলেন, মৌসুমের প্রথম দিকে ডিলাররা বীজ মজুত করে ফেলেন। পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রি করেন ডিলাররা। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয় এবং বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। এদিকে নেত্রকোনা শহরের শহীদ মিনারের পাশে সার হাইব্রিড বীজ ও কীটনাশক ডিলার মেসার্স চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, আপনারা যে বিষয়টি শুনেছেন তা পুরোপুরি মিথ্যে, আমরা কোনো কৃষকের কাছ থেকে বীজের দাম বেশি রাখি না, সরকারিভাবে বীজের গায়ে যে দাম সরকার নির্ধারণ করেছে আমরা সেই দামেই বীজ বিক্রি করি। অন্যদিকে সার বীজ ও কীটনাশক ডিলার মেসার্স নিরঞ্জন সরকার বলেন, বাজারে এখন বীজের কোনো সংকট নেই, তবে কেউ যদি বেশি দামে বীজ বিক্রি করে তাহলে সেটা হবে অন্যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে নেত্রকোনায় সরকারি ভাবে ৮৬ মেট্রিক টন ধান বীজ বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদার ৮৫ শতাংশ বীজ কৃষক তাদের ঘর থেকে সংগ্রহ করেছেন। অবশিষ্ট বীজ বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগ্রহ করা বীজের বেশিরভাগই উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে নেত্রকোনায় ৮৬ মেট্রিক টন ধান বীজ বিতরণ করা হয়েছে। যার মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ২০ মেট্রিক টন এবং উফশী বিভিন্ন জাতের ৩৫ মেট্রিক টন ধান বীজ রয়েছে। বর্তমানে ব্রি ধান ২৮,২৯,৭৪,৮৮,৮৯ এবং ৯২ জাতের। নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে নেত্রকোনা জেলায় উচ্চ ফলনশীল এবং উফশী জাতের ৮৬ মেট্রিক টন ধান বীজ সরকারিভাবে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে ব্রি ধান-১০০ জাতের কিছুটা চাহিদা ছিল। তাদের চাহিদা অনুযায়ী বীজ এনে বিতরন করা হয়েছে। এছাড়া বাজারে বীজের সংকট নেই বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন আমার জানা মতে এখনো বীজের তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরও যদি কোনো কৃষকের বীজের প্রয়োজন হয় তাহলে তারা যেন আমাদের উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ শরীফ। নির্বাহী সম্পাদক : তাসেরা তাজরীন। বার্তা সম্পাদক : মোহাম্মদ আমান উল্যা।সম্পাদক ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: এমএস প্লাজা (৩য় তলা)২৭/সি/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
তুহিন
প্রেস ২১৯/২, ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল হতে মুদ্রিত। ফোন:
+৮৮-০২-৪১০৫২৪৯৪, মোবাইল: ০১৯৭১-৮৪২৩৬৫, ০১৭১১৮৪২৩৬৫, বার্তা: ০১৭৩১-৮৫৭১৮৬
,anantabanglanews24@gmail.com
Copyright © 2024 দৈনিক অনন্ত বাংলা. All rights reserved.