1. admin@anantabangla.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন
অনন্ত বাংলা শিরোনাম :
শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে; মেজর (অব.) হাফিজ  ঝিনাইগাতীতে ট্রলি ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১ ও আহত ১ আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতিতে ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত মাদক ব্যবসায়ীর থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার ছবি ভাইরাল চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফসলের সাথে ১১ বিঘা আলু গম সরিষা হালচাষ দিয়ে নষ্ট করলো প্রতিপক্ষ নেত্রকোনায় ইয়াবাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী সেনাবাহিনীর হাতে আটক নেত্রকোনায় ফসল রক্ষা বাঁধের এখনো কমিটিই হয়নি, কাজ শেষ নিয়ে শঙ্কা কৃষকদের  ধুনট প্রেসক্লাবের ২ বছর মেয়াদি কমিটি গঠন নান্দাইলে পঙ্গু মামুন কে  হুইল চেয়ার প্রদান  লালমোহনে মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে মতবিনিময় সভা ও সংবর্ধনা

নেত্রকোনায় এন আইডি কার্ডের ভুলে জর্জরিত লাখ লাখ মানুষের জীবন, দুর্ভোগের অপর নাম এনআইডি সংশোধন

সোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫৩ বার পঠিত
জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের অপর নাম পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তি। প্রতিদিন শত শত গ্রাহক ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়সহ নেত্রকোনা জেলার প্রতিটি-উপজেলা অফিসে এনআইডির নানা ধরনের ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করেই চলেছেন। কিন্তু সংশোধন হচ্ছে তার ১০ শতাংশের নিচে। বাকি ৯০ শতাংশ গ্রাহক দিনের পর দিন ঘুরছেন কিন্তু সুরাহা পাচ্ছেন না। এমনকি চলমান বর্তমান জরুরী পরিস্থিতির মধ্যেও সুদূর গ্রামাঞ্চলের মানুষ ছুটে আসছেন ময়মনসিংহ আঞ্চলিক অফিসে ও নেত্রকোনা জেলা এবং উপজেলা নির্বাচন ভবনে, ঘুরছেন দিনের পর দিন।কারো কারো এনআইডি সংশোধন হলেও অধিকাংশ গ্রাহকের এনআইডি সংশোধন না হওয়ায় তারা পড়েছেন মহাবিপদে। কারো নামের বানানে ভুল, বাবা-মা, স্বামীর নামের বানান ভুল, জন্ম তারিখ ভুল, ঠিকানায় ভুল- এসব ঘটনা অসংখ্য এনআইডিতে। এ কারণে কেউ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন না, আবার কারো বিদেশ যাওয়ার টিকেট থাকলে এনআইডিতে সামান্য ভুলের কারণে ভিসা হচ্ছে না, এমনি নানান ধরনের সমস্যায় ভুগছেন জেলার লাখ লাখ গ্রাহক।
তারা এনআইডির এসব ভুলের জন্য অপেশাদার কর্মচারী বা ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের দায়ী করছেন, তাদের অপেশাদার মনোভাবকে দায়ী করেছেন। অনেকে আবার জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীকে খুশি করে কোনো রকমে তার এনআইডির ভুল সংশোধন করতে সমর্থ হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এনআইডিতে ভুলের সমস্যায় শুরু থেকেই (২০০৮ সাল) ভুগছেন নেত্রকোনা জেলার নাগরিকরা। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, এদিকে সময়মতো সংশোধন না হওয়ায় সংশোধনের জন্য আবেদনের স্তূপ জমেছে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের (আইইটি ভবনের) প্রতিটি উপজেলা-জেলাভিত্তিক কর্মকর্তার টেবিলে। কিন্তু দিনের পর দিন ঘুরেও গ্রাহকরা এসব ছোটখাটো ত্রুটি সংশোধন করাতে পারছেন না। এই ভুল সংশোধনের জন্য সোমবার (২১ অক্টোবর) ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ আসছেন নেত্রকোনা থেকে, কেউ আসছেন শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল থেকে। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। দিনের পর দিন ঘুরপাক খাচ্ছেন আবেদনকারীরা। কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না। এমনকি ছোটখাটো কর্মী বা গার্ডের দুর্ব্যবহারে অনেক সময় অফিসারের টেবিল পর্যন্ত যাওয়াও দুষ্কর হয়ে ওঠে। জাতীয় পরিচয়পত্রের এসব ছোটখাটো ভুল সংশোধনের জন্য অনৈতিকভাবে অর্থ লেনদেনে তারা বাধ্য হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় তাদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় চাকরি হচ্ছে না, কেউ বেতন পাচ্ছেন না, কেউবা ব্যাংকের নিয়মের গ্যাঁড়াকলে পড়ে টাকা তুলতে পারছেন না। পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় অনেক হতদরিদ্র ভিজিএফসহ বিভিন্ন ত্রাণ নিতে পারছেন না। এ রকম অসংখ্য সমস্যায় সম্মুখীন সাধারণ মানুষ।নেত্রকোনার সুমন মোস্তাফার জন্ম ১৯৯৮ সালে। এসএসসি সার্টিফিকেট রয়েছে। কিন্তু তার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলক্রমে তা দেখানো হয় ১৯৯৬ সাল। এই সংশোধনীর জন্য নিজ উপজেলায় আবেদন জমা দিয়েছেন ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। সংশোধনীর জন্য দলিল হিসেবে দিয়েছেন এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট, জন্ম সনদ, বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র, ওয়ারিশ সনদ ও চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র। আবেদন জমা দেয়ার সময় কার্ড দেয়ার সম্ভাব্য তারিখ দেয়া হয় ওই সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু আবেদন জমা দেয়ার ৫ বছরের বেশি সময় পার হলেও তার আবেদনের অবস্থা কী এখনো তিনি জানেন না। বিগত ৪-৫ বছরে অন্তত ২০-২৫ বার উপজেলা অফিসে এবং ৮-১০ বার নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ এনআইডি উইংয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার দপ্তরে ঘুরেও কারো কোনো সহযোগিতা পাননি তিনি। এ রকম লাখ লাখ গ্রাহক নানা ধরনের সংশোধনের আবেদন করেও দীর্ঘদিন সংশোধন না হওয়ায় এমন ভোগান্তির অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা নির্বাচন অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রতিদিন বহু ফাইল সংশোধনের জন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলা-জেলা অফিসে জমা পড়েছে। অধিকাংশের ত্রুটিগুলো বয়স বা নাম সংশোধনভিত্তিক। তার স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দিতে পারায় তাদের এনআইডি সংশোধন করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন মতলবে অনেকে দ্বৈত ভোটার বা নাম-বয়স পাল্টে মামলা বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এনআইডি করছে। এগুলো ঠেকাতে আমরা সতর্কভাবে চলছি। তবে সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে সঠিক পাওয়া গেলে সেটি সংশোধনযোগ্য বলে জানান তিনি। তবে অর্থ লেনদেনের কোনো ঘটনা তার জানা নেই। এমনটি প্রমাণ হলে ওই কর্মীকে শাস্তির আওতায় নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, ইসির দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নেত্রকোনায় প্রতিদিন দুই থেকে তিন শতাধিক আবেদন জমা পড়ে। এ বিষয়ে তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে। যার মধ্যে সামান্য ভুল থাকলে তা উপজেলা-জেলা অফিস থেকে সমাধান করা হয়। কিন্তু নানা ছুতোয় উপজেলা বা জেলা কার্যালয় এনআইডি সংশোধনে নানান বাহানা দেখায়। এ কাগজ সে কাগজ চায়, যার ফলে নেত্রকোনা আঞ্চলিক অফিসে প্রায় পাঁচ হাজার এনআইডি সংশোধনের জন্য পড়ে রয়েছে। আর বয়স বা জটিল কোনো সংশোধনের জন্য আবেদনগুলো ময়মনসিংহ বিভাগীয় অথবা প্রধান কার্যালয়ে চলে যায়। অর্থাৎ বি এবং সি ক্যাটাগরির আবেদনগুলো প্রধান কার্যালয়ে পাঠান তারা। নেত্রকোনার বর্তমান বি ক্যাটাগরির প্রায় ১০ হাজার আবেদন এবং সি ক্যাটাগরির হাজারের ঊর্ধ্বে আবেদন ইসিতে জমা আছে। এসব আবেদনের স্বপক্ষে তেমন কোনো কাগজপত্র বা প্রমাণপত্র জমা দিতে না পারায় আবেদনগুলোর সুরাহা করা যাচ্ছে না বলে জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছে। তবে আবেদনকারীরা বলেছেন, তাদের আবেদন কোন টেবিলে আছে তা না জানা, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে যেতে না পারা বা না যেতে দেয়া, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে না পারায় তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পারছেন না। যার ফলে বছরের পর বছর ঘুরেও অতি প্রয়োজনীয় এনআইডি সংশোধন করতে পারছেন না, যার জন্য জেলা ও উপজেলা এবং বিভাগীয় নির্বাচন অফিসার ও ইসিকেই দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত ©২০২৪ দৈনিক অনন্ত বাংলা
Theme Customized BY SHAKIL IT PARK