আগামী ৫ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাবলীগ জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার ইস্যুতে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। সমাবেশ নিয়ে উভয় পক্ষই ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। উলামা মাশায়েখ পরিষদের ব্যানারে হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীরা তাবলীগ, মাদরাসা ও দ্বীন রক্ষার নামে মহাসমাবেশের আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, সাধারণ মুসল্লী পরিষদের পক্ষ থেকে একই তারিখে ও একই স্থানে জাতীয় মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে, যেখানে তারা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের হীন তৎপরতা, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধর্মীয় সংঘাতের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং তাবলীগ জামাতের বিশ্ব আমীর মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানাতে চায়। এছাড়া মাদরাসার ছাত্রদের চরমপন্থী কাজে ব্যবহারের অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন স্থানে ইজতেমা ও মারকাজ দখল ও হামলা, এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধেও এ সমাবেশে আলোচনা হবে।
হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসাবে ধর্ম উপদেষ্টার নাম থাকলেও তার পিএস আশিকুর রহমান জানান, এই সম্মেলন সম্পর্কে ধর্ম উপদেষ্টা কিছুই জানেন না। তার নাম ব্যবহার করে কেউ হয়তো অনৈতিকভাবে মিডিয়া ও প্রশাসনকে প্রভাবিত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। ধর্ম উপদেষ্টা এ সমাবেশে যাবেন না বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
উলামা মাশায়েখ সমাবেশ বাস্তবায়নকারী কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আশিকুর রহমান জানান, দেশের সব মাদরাসার চলমান পরীক্ষা বন্ধ রেখে ছুটি ঘোষণা করা হবে এবং ছাত্রদের সমাবেশে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেকোনো মূল্যে সমাবেশ বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক গতকাল সরাসরি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে, সাধারণ মুসল্লী পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল রাত থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চের কাজ শুরু করা হবে, ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ও উগ্রবাদীদের সরকার প্রতিহত করবে বলে তিনি আশা করেন। তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থানের আশ্বাসও দেন।
এ অবস্থায় আশেপাশের জনগণ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। তাদের ধারণা, টঙ্গীতে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বরের মতো সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পরিস্থিতি সংঘাতময় হলে ১৪৪ ধারা জারি করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কোনো পক্ষকেই সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।